‘প্রিয় চিনার পাতা, ইতি সেগুন…’ নামটা শুনে সত্যিই অবাক হচ্ছেন তাই তো? হ্যাঁ, অবাক হওয়ারই কথা কারণ এটি একটি ছবির নাম। এই ছবিটির রূপকার কুমার চৌধুরী, হ্যাঁ অভিনেতা-পরিচালক কুমার চৌধুরী।
সবচেয়ে অদ্ভুত ব্যাপার কি জানেন? প্রযোজকের থেকে প্রত্যাখ্যিত হয়ে এই ছবিটি নির্মাণের জন্য পরিচালক নিজের স্ত্রীর গহনা বিক্রি করেছেন এবং ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন। কোন প্রযোজক তাঁর ছবির প্রতি বিন্দুমাত্র আগ্রহ দেখান নি। বহু প্রযোজকের কাছ থেকে হয়ে তিনি হয়ে তিনি এই চরম সিদ্ধান্ত(স্ত্রীর গয়না বিক্রি এবং ব্যাংক ঋণ) নেন এবং ছবিটি নির্মাণ করেন।

এই ছবিটি ২৬ তম ‘কলকাতা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভাল এ এশিয়ান সেলেক্ট নেটপ্যাক অ্যাওয়ার্ড’ প্রতিযোগিতামূলক বিভাগে মনোনীত হয়।এছাড়াও ২৩ তম ‘ইউকে এশিয়ান ফিলম ফেস্টিভাল’ লন্ডন এর জন্য মনোনীত হয়। ৭ তম ‘রাজস্থান ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে’ বেস্ট ডিরেক্টর ড্যেবুট (ক্রিটিক্স চয়েস) অ্যাওয়ার্ড’ পায় ছবিটি। ‘ড্রুক ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’ এ আউটস্ট্যান্ডিং অ্যাচিভমেন্ট অ্যাওয়ার্ড পায় এই ছবিটি। ‘কে আই এফ এফ আই’ : জয়পুর এই ছবিটি সিলেক্ট হয়।২য় ‘ডায়নামা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’, ‘সেভেন কালার ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’, ‘ফার্স্ট টাইম ফিল্ম মেকার সেশন ইন ইউএসএ’ এই ছবিটি মনোনীত হয়েছে।

এই ছবিটির মূল গল্প হলো ঠিক এমন :
একটি রোহিঙ্গা মেয়ে মায়ানমার থেকে বিতাড়িত হয়ে ভারতের সীমান্তে ধরা পড়ে এবং সেখান থেকে তাকে ভারতের একটি হোমে পাঠানো হয়। মেয়েটি তার মা-বাবা, পরিবার-পরিজনের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ওই হোমটিতে আটকে পড়ে। পরিবার-পরিজন থেকে আলাদা হয় এবং অচেনা এই শহর তথা পরিবেশে সে একেবারে একা হয়ে যায়। অন্যদিকে একটি কাশ্মীরি ছেলের সঙ্গে ঘটনাচক্রে তার আলাপ হয়। এর পর কী ঘটে আদৌ কি সেই মেয়েটি তার পরিবার তার মা-বাবার কাছে ফিরে যেতে পারে সেটাই এই গল্পের মূল বিষয়বস্তু।
রোহিঙ্গা মেয়েটির চরিত্রে অভিনয় করেছেন পিয়ালী সামন্ত এবং কাশ্মীরি ছেলেটি চরিত্রে অভিনয় করেছেন ক্যাপ্টেন আরমান শাহ।এছাড়া অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইকবাল সুলতান, নীলাঞ্জনা বিশ্বাস, রঞ্জিনী চট্টোপাধ্যায়, রনজয় ভট্টাচার্য্য এবং অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়।
এই ছবিটির মূল গল্প চিত্রনাট্য সংলাপ এবং পরিচালনার দায়িত্ব সামলেছেন পরিচালক কুমার চৌধুরী।

ছবিটির সংগীত পরিচালনা এবং আবহসংগীত এর দায়িত্ব সামলেছেন মেঘ ব্যানার্জী।
এই ছবিটি সম্পাদনা করেছেন প্রদীপ্ত ভট্টাচার্য্য। এই ছবিটির ক্যামেরার দায়িত্ব সামলেছেন প্রসেনজিৎ কোলে।
গয়না বিক্রি করে এই ছবিটি প্রযোজনা করেছেন পিয়ালি চৌধুরী।
করোনা আবহে সিনেমা হলগুলো বন্ধ থাকার দরুন এই ছবিটির মুক্তি আটকে রয়েছে। তবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এবং করোনা আবহ কিছুটা কম হলে এই ছবিটি সিনেমা হলে মুক্তি দেওয়ার কথা ভাবছেন পরিচালক।
এই ছবির মুক্তির পর কী ভাবছেন, তাহলে কি আপনি পরের ছবি করবেন বা প্রডিউসার পেয়েছেন, না পেলে কিভাবে করবেন? উত্তরে কুমার চৌধুরী জানান”একবার যখন এভাবেই ছবি করেছি, পরের ছবির জন্য প্রযোজক অবশ্যই চাই এবং আমি প্রযোজক খুঁজছি তবে এখনো পাইনি।তবে প্রযোজক না পাওয়া গেলে আমি কি বসে থাকবো? তখন আমার ভাবতে হবে নতুন কোন আইডিয়া থেকে ছবি করা যেতে পারে বা কিভাবে করা যেতে পারে। সেটা ভাবতে হবে, ছবি করতেই হবে এবং ছবি আমি করবই”।