আজ আমরা কথা বলবো একজন প্রকৃত লড়াকু, হার না মানা একজন মানুষের কথা।
এই হার না মানা মানসিকতা সম্পন্ন মানুষটির নাম তন্ময় ভট্টাচার্য্য। ছোটবেলা থেকেই তার অভিনয়ের প্রতি প্যাশন ছিল। তার দাদা চিন্ময় ভট্টাচার্য নাট্যদলে অভিনয় করতো এবং বিভিন্ন সিরিয়াল, ছবিতে কাজ করতো। তাকে দেখেও তার অভিনয় করবার ইচ্ছা মনে জাগে।
তিনি ছোটবেলা থেকেই খুব ভালো ফুটবল খেলতেন এবং ফুটবলেই তিন নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তোলেন। তন্ময় পুনে এফ.সি., চেন্নাই এফ.সি, ডিএসকে শিবাজীয়ানস্, নেরোকা এফ.সি, জর্জ টেলিগ্রাফ দলের হয়ে ফুটবল খেলেন।

ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন চরিত্রে ইনজুরিতে জর্জরিত ছিলেন তিনি। শিলিগুড়ি স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়ার হয়ে খেলার সময় তিনি সেপটিসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হন। প্রায় দেড় মাস তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। জীবন যুদ্ধে লড়ে সেখান থেকে বেঁচে ফেরেন। এত বড়ো রোগের থেকে ওঠার পরে তিনি পেশাদারী ফুটবল খেলতে শুরু করেন এবং অনেক সময় ইনজুরির কবলে পড়তেন। তার ইনজুরি রিকভারি হতে অনেক সময় লাগতো তাও তিনি হার না-মেনে অনেক সময় ইনজুরি নিয়ে খেলতেন। এইভাবে অনেক বছর তিনি ইঞ্জুরি নিয়েও খেলেছেন। চরম যন্ত্রণা সহ্য করেও তিনি এই টপ লেভেল এর কম্পেটেটিভ ফুটবল খেলে গেছেন। এরপর প্রচুর ইনজুরির কারণে তিনি খেলা ছেড়ে দিতে বাধ্য হন।

তার অভিনয় আসাটাও নিছক রূপকথার গল্পের মতো। তিনি তার এক আত্মীয়ের কাছ থেকে জানতে পারেন ‘ময়দান’ নামক একটি ছবিতে একজন গোলকিপারের চরিত্রে অভিনয় করার জন্য অডিশন চলছে। তিনি আর দেরি না করে সেখানে অডিশন দিতে যান। এই অডিশন টালিগঞ্জে হয়েছিল। ক্যামেরার সামনে তার সাবলীল অভিনয় এবং তার খেলার ভিডিওটি দেখে তারা খুশি হন এবং পরিচালক অমিত শর্মার কাছে তার অভিনীত খেলার ভিডিও ক্লিপগুলো পাঠানো হয়। পরিচালক অমিত শর্মা তার অভিনয় দেখে তাকে পছন্দ করেন এবং ময়দান ছবিতে প্রদ্যুৎ বর্মনের চরিত্রে তাকে কাস্ট করা হয়। তার অভিনীত প্রথম ছবি হল ‘ময়দান’।

ময়দান ছবির কাজ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন এই ছবিতে কাজ করার দরুন তিনি সুপারস্টার অজয় দেবগনের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখতে পেরেছেন। পরিচালক ও তাকে অনেক ব্যাপারে সাহায্য করেছেন।
১৯৬২ সালের ভারতের এশিয়ান কাপ জয়ের প্রেক্ষাপটে এই ছবিটি নির্মিত হয়েছে। ছবিটিতে ফুটবল কোচ সৈয়দ আব্দুর রহিমের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অজয় দেবগন। এছাড়াও এই ছবিতে রুদ্রনীল ঘোষ এবং প্রিয়ামণি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন।
তন্ময় জানান এই ছবির শুটিং লখনউয়ের সিতাপুর, কলকাতার মহামেডানের মাঠে, রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামে হয়েছে। মুম্বাইয়ের মাড আইল্যান্ডে এই ছবিটির একটি বিশাল বড় সেট নির্মিত হয়েছে যেখানে এই ছবিটির শুটিংয়ের জন্য। তবে কিছুদিন আগে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এই ছবিটির সেটের অনেকটা অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেগুলি বর্তমানে ঠিক করা হয়েছে।
আইপিএলের অ্যাড ফিল্মেও তিনি অভিনয় করেছেন।

পরিচালক অরূপ সেনগুপ্তের স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি ‘আন এথিক্যাল’ এ তিনি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বাংলায় এটিই তার প্রথম ডেবিউ ছবি। এই ধরনের বাস্তবমুখী ছবিতে তিনি অভিনয় করতে সবসময়ই মুখিয়ে থাকেন। এই স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবিটি নিয়ে তিনি যথেষ্ট আশাবাদী। স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি ‘আনএথিক্যাল’র তিনি কয়েকদিন আগেই সম্পূর্ণ করেছেন।
তার ভবিষ্যৎ প্রজেক্ট সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন রিসেন্ট একটি গার্মেন্টের অ্যাড ফিল্মের শ্যুট হয়ে গেছে, খুব শীঘ্রই মুক্তি পাবে। মুম্বাইতে আরও কিছু কাজের কথা চলছে।