বহু দিনের ভাবনা, লেখা এবার রূপান্তরিত হতে চলেছে সিনেমাতে। শীঘ্রই আসতে চলেছে পরিচালক সমীক রায়চৌধুরীর ‘বেলাইন’। এটি একটি ড্রামা থ্রিলার। ১০০ মিনিটের সিনেমা। গল্পটির শ্যুটিং শুরু হয়েছে অবশ্য বেশিদিন হয়নি। তবে সমস্ত পর্ব শেষ হয়ে গেলেই এটি দেখা যাবে একটি নতুন ওটিটি প্ল্যার্টফর্মে। এই সিনেমাতে মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন, দক্ষ প্রবীণ অভিনেতা পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিনেত্রী শ্রেয়া ভট্টাচার্য, এবং তথাগত। সিনেমার D.O.P. করছেন সুপ্রিয় দত্ত। আর্ট ডিরেক্টার তপন শেঠ। এবং এডিটিং এর দায়িত্বে রয়েছেন, সংলাপ ভৌমিক।
গল্পটির সার সংক্ষেপ এখনও পর্যন্ত যা জানা যাচ্ছে তা হলো, এখন বয়স্ক মানুষ মানুষ, যিনি চাকরি থেকে অবসরপ্রাপ্ত, ৬০ বছর ঊর্ধ। তাঁর জীবন এখন কাটে, টিভি দেখে, ইনডোর গেম্স্ খেলে, সিরিয়াল দেখে আর কখনও বাড়ির পরিচারিকাদের সাথে বাক-বিতণ্ডায়। তবে একদিন হঠাৎ আসে একটি রং নাম্বার থেকে কল। যেখানে ফোনের বিপরীতে রয়েছে একটি মেয়ে জিনিয়া নামের। যে তার প্রেমিকের সাথে লিভ-ইন রিলেশনশিপ এ আছে। তবে এই ফোন কলের মধ্যেই তাদের জীবনের মধ্যে প্রবেশ করেন বৃদ্ধ। তাদের কথা বলা চলে প্রায় ৩ দিন ধরে। আর সেখান থেকেই তৈরী হয় একটি কেমিস্ট্রি। গল্পটির মাঝে একটি যৌনতার দিককেও দেখানো হয়েছে। তারপরেই নেয় গল্পের মোড় আর সেখান থেকেই তৈরী হয় এক অদ্ভুত রহস্য। তারপরই ধীরে ধীরে তার অন্তিম কাহিনীর দিকে পৌঁছাবে। আর তা দেখার জন্যে অবশ্যই দর্শকদেরকে অপেক্ষা করতে হবে বেলাইনের জন্যে।
এই সিনেমা নিয়ে পরিচালক বলেন, এই গল্পটি তিনি ২০১৫ সালে প্রথম লিখেছিলেন। যেখানে দুটি ঘরকে নিয়েই ঘটনা। সেই ঘর দুটির মধ্যেই চলতে থাকে একটি সাইকোলজিক্যাল ড্রামা। যেখানে একটি ফোন সেই দুটি ঘরের মধ্যে যোগ স্থাপন করেছে। এখনও পর্যন্ত মাত্র কয়েকদিন শুটিং হয়েছে। সকলেই খুব সুন্দর অভিনয় করছেন। আর এই সিনেমাতে পরাণ দা রয়েছেন, আর তার অভিনয় নিয়ে তো জাস্ট কিছু বলার নেই।
পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য কাহিনী নিয়ে এখনও কোনো রকম মুখ খোলেননি। শুধু বলেছেন বেলাইন সিনেমা, তবে আদতে গল্প বেলাইনে যাচ্ছে নাকি তা সঠিক লাইনে যাচ্ছে তা সিনেমার শেষে এসেই দর্শকরা জানতে পারবেন। তবে বেলাইন প্রকাশিত হবে একটি নতুন ওটিটি প্ল্যার্টফর্মে।
এরপর সিনেমাতে অন্য মুখ্য চরিত্রে যিনি রয়েছেন অর্থাৎ শ্রেয়া জানিয়েছেন তাঁর নিজের চরিত্রের কথা এবং তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে। শ্রেয়া জানিয়েছেন, “এখানে আমার চরিত্রের নাম জিনিয়া যে গ্রাম থেকে এসেছে তবে এখন কলকাতা শহরে থাকে। তবে সে খুব ইন্ডিপেন্ডেন্ট সোল। এখানে সে তার বয়ফ্রেন্ড এর সাথে লিভ ইন করে তবে তার সম্পর্ক ক্রমশ হয়ে উঠেছে টক্সিক বা যাকে বলা যায় অসহনীয়। তবে এর মাঝেই ঘটে যায় একটি ফোন কল আর সেখান থেকেই নেয় নতুন রহস্যের মোড়। আর এটা বলতেই হয় যে এই জিনিয়ার চরিত্রে রয়েছে অনেকগুলি লেয়ার যা আমাকে আরও বেশি করে আকৃষ্ট করেছে। ”
এরপর পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর সাথে তার কাজের অভিজ্ঞতা কেমন তা জানতে চাইলে শ্রেয়া আমাদের জানান, “উনি খুবই ফ্রেন্ডলি একটি মানুষ সেটের মধ্যে। আর ভীষণ ভাবে কোঅপারেটিভ, সবাইকে খুব মজার মধ্যে রাখতে ভালোবাসেন। আর এটি ওনার খুব পিজোটিভ একটা দিক। ওনার কাছে থেকে অনেক কিছু শিখেছি। দৃশ্য করতে করতে প্রত্যেকটি পদে শিখেছি, আর এটার যে কী মজা তা বলে বোঝাতে পারবো না। উনি আমাকে আমার চরিত্রটি বুঝতে খুব সাহায্য করেছেন।
সিনেমাতে ওপর একটি চরিত্র হল তথাগত-এর। যিনি এখানে জিনিয়ার বয়ফ্রেন্ড এর ভূমিকাতে আছেন। তিনি জানান, ” আমি এই সিনেমাতে একজন লেখক। যার ব্যক্তিগত এবং বাইরের দুটো জীবনেই অনেক ক্রাইসিস চলছে। খুবই রহস্যময় এই চরিত্রটি। তাই করতেও বেশ মজা লাগছে। আর পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এর কথা কী বলবো, উনি তো যেন কিছু না করেই অনেক কিছু করে ফেলছেন। খুবই শিক্ষনীয় মানুষ উনি।
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে যে, খুব শীঘ্রই রহস্যে মোড়া একটি গল্প আমাদের কাছে হাজির করতে চলেছেন পরিচালক সমীক রায়চৌধুরী। তাই এখন অপেক্ষা সিনেমা শেষ হওয়ার এবং তা ওটিটি মাধ্যমে প্রকাশ পাওয়া।