“শাস্ত্রীয় সংগীত জানাটা প্রতিটি কণ্ঠশিল্পীর জন্য খুবই প্রয়োজনীয়” দীপমালা হালদার।

দীপমালা হালদার নামটা চেনা চেনা লাগছে? হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন আমি স্টার জলসার সিঙ্গিং রিয়েলিটি শো সুপার সিঙ্গার এর দীপমালা হালদারের কথা বলছি।
ছোটবেলা থেকেই দীপমালা নাচ এবং গান দুটি প্র্যাকটিস করতেন কিন্তু যখন ক্লাস থ্রিতে উঠলেন তখন থেকে তিনি শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শেখা শুরু করেন।
তিনি যখন ক্লাস ফাইভে পড়েন তখন ইটিভি বাংলায় প্রচারিত বারান্দায় রোদ্দুর শো এ তিনি অংশগ্রহণ করেন। এই শো এর সঞ্চালনা করতেন ভূমি ব্যান্ড এবং বিচারকের আসনে ছিলেন রূপঙ্কর বাগচী।

পারফর্মরত দীপমালা হালদার।


এরপর তিনি ‘সুরদরিয়া’ নামক আরেকটি মিউজিক রিয়েলিটি শোতে অংশগ্রহণ করেন যেখানে সঞ্চালকের ভূমিকায় ছিলেন ক্যাকটাস ব্যান্ডের ভোকালিস্ট সিধু এবং বিচারক ছিলেন বিশিষ্ট সুরকার বাপ্পি লাহিড়ী।
তিনি জি বাংলা লিটিল চ্যাম্প এও অংশগ্রহণ করেছিলেন।
২০১৩ সালে ইন্ডিয়ান আইডলেও তিনি অংশগ্ৰহণ করেন।
দীপমালা আর একটি রিয়েলিটি শো’র এ চ্যাম্পিয়ন হন এবং সেখান থেকে পুরস্কার স্বরূপ এ আর রহমানের মিউজিক স্কুলে সরাসরি ভর্তি হওয়ার সুযোগ পান এবং এ আর রহমানের এর সামনে তিনি একটি গান রেকর্ডিং করেন। এই মিউজিক রিয়ালিটি শো এর বিচারক ছিলেন শ্রী বিক্রম ঘোষ এবং শ্রীমতি সুচিত্রা কৃষ্ণমূর্তি।
দীপমালা জানান সুপার সিঙ্গার এর মঞ্চে আশাজির সামনে গাওয়া তার কাছে অনেকটা স্বপ্নের মতো ছিল। কিংবদন্তি কণ্ঠশিল্পী আশা ভোঁসলের সামনে পারফর্ম করাটা তার কাছে একটি স্মরণীয় স্মৃতি হয়ে থাকবে। তিনি আরো জানান এই রিয়েলিটি শোতে অংশগ্রহণ এর সুবাদে বিচারকদের কাছ থেকে এবং অগণিত লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছ থেকে তিনি অকৃত্রিম ভালোবাসা পেয়েছেন।

ট্র্যাডিশনাল লুক এ কন্ঠশিল্পী দীপমালা হালদার।


দীপমালা জানান তিনি শ্রদ্ধেয় অরূপ মুখার্জীর কাছে প্রথমে শাস্ত্রীয় সংগীত শেখা শুরু করেন। এরপর শ্রী সুমন চক্রবর্তীর কাছে প্রায় ৮ থেকে ৯ বছর শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শেখেন। এরপর তিন অমৃতা চ্যাটার্জীর কাছে শেখেন। পরবর্তীতে তিনি ঝুমুর চ্যাটার্জীর কাছেও শেখেন। এছাড়াও শ্রী নির্মাল্য মিশ্র এবং শ্রী কল্যাণ ভট্টাচার্যের কাছেও শাস্ত্রীয় সংগীত শেখেন।
বর্তমানে তিনি শ্রী জয়ন্ত সরকারের কাছে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিখছেন।
দীপমালা জানান যারা গান শিখছেন বা ভবিষ্যতে গায়ক গায়িকা হতে চান তাদের অবশ্যই অন্তত একবার কোন একটি মিউজিক রিয়েলিটি শোতে অংশগ্রহণ করা উচিত। তিনি বলেন রিয়েলিটি শোতে অংশগ্রহণ করার সুবাদে তারা ভাল পারফর্মার হতে পারেন এবং তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি গুলি ও তারা বুঝতে পারবেন।
দীপমালা জানান সুপার সিঙ্গার এর গ্ৰুমার শোভন গাঙ্গুলীর কাছ থেকে তিনি অনেক কিছু শিখতে এবং বুঝতে পেরেছেন যা তাকে গান গাওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাহায্য করেছে তার পারফরম্যান্স কে আরো ইম্প্রভাইজ করতে। এর সঙ্গে তিনি এও জানান শোভনদার গান গাওয়ার স্টাইল আমার খুব ভালো লাগে এবং শোভনদা একজন সত্যিই গুণী শিল্পী।

ছবিতে দীপমালা হালদার।


রেওয়াজ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন তিনি টানা দশ বছর সকালে তিন ঘন্টা এবং বিকেলে তিন ঘণ্টা করে রেওয়াজ করতেন এবং বর্তমানে সেই অভ্যাসটা ধরে রাখার চেষ্টা করছেন তবে ব্যস্ততার কারণে ৬ঘন্টা প্রতিদিন রেওয়াজ করা তার পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠেনা। তিনি বলেন একজন কন্ঠশিল্পীর প্রত্যেকদিন নিয়মমাফিক রেওয়াজ করার প্রয়োজনীয়তা আছে। রেওয়াজ গানের গলা কে এবং গানকে সবদিক থেকে পরিপূর্ণতা দেয়। একজন প্রকৃত কণ্ঠশিল্পীর জন্য রেওয়াজ ব্যতীত অন্য কোন পথ নেই।
গান গাওয়ার ক্ষেত্রে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শেখা প্রয়োজন কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান “শাস্ত্রীয় সংগীত না জানলে কোনদিনও গানের আত্মার সাথে অন্তঃস্থ হওয়া যায় না। তিনি বলেন গানের ব্যাকরণ হলো শাস্ত্রীয় সংগীত তাই গানের ব্যাকরণ না জানলে গানটা গাইব কি করে। প্রতিটি কণ্ঠশিল্পীর শাস্ত্রীয় সংগীত অবশ্যই জেনে রাখা উচিত। শুধু গান গাইবার জন্য নয় গানটি কে বোঝানোর জন্য আত্মস্থ করার জন্য শাস্ত্রীয় সংগীতের বিকল্প নেই।”

সুপার সিঙ্গার এ পারফর্মরত দীপমালা হালদার।


আগামী প্রজেক্ট সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান তিনি ‘এনআইডিয়াজ’, ‘উইন্ডোজ প্রোডাকশন’ এবং শিলাজিতের মিউজিক কোম্পানির ‘এঞ্জেল প্রোডাকশনে’র সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। এছাড়াও ভবিষ্যতে বেশকিছু অরিজিনাল মিউজিক অ্যালবাম করার ইচ্ছাও তার আছে। তার ইউটিউব চ্যানেল থেকে বেশকিছু বলিউডের গানের কভার সং গাওয়ার তার ইচ্ছা আছে। ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্টিস্ট হিসেবেও তিনি তার সোলো মিউজিক অ্যালবাম বের করতে চান তবে তা এখন নয়, কিছুদিন পর।এছাড়াও বেশ কয়েকটি প্রজেক্ট নিয়ে তার সঙ্গে কথাবার্তা চলছে তবে এখনও ফাইনাল হয়নি অতিমারির কারণে তাই এ ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারবেন না।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x