কমেডি গল্পের মোড়কে সতর্কতার বার্তা দিতে কতটা সক্ষম “Helmet”???

যৌন চাহিদা স্বাভাবিক জীবনযাত্রার আর পাঁচটি চাহিদার মতোই একটি সাধারণ বিষয়।কিন্তু সেই চাহিদা পূরণের ফলাফল হিসেবে কিছু দায়িত্ব থাকে প্রতিটা মানুষের – ওপর দিকের মানুষের প্রতি,পরিবারের,সমাজের এবং সর্বপরি দেশের প্রতি।

            একটা সময় ছিল যখন এই কথা গুলো মাথায় থাকলেও উপায় ছিলনা।কিন্তু এখন সময় অনেকটা এগিয়ে গেছে , তাই কোনকিছুর ক্ষতিকর প্রভাব যাতে ব্যক্তি , সমাজ এবং দেশের ওপর না পড়ে তার জন্য অনেক সুব্যবস্থা এসেছে বিজ্ঞানের আশীর্বাদে। আর এমনি একটি জিনিস হল নিরোধ বা প্রচলিত কথায় কন্ডোম , যার ব্যাবহার হল স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে যৌন চাহিদা পূরণের উপায়,এবং বহুবছরের যে সমস্যা জন সংখ্যা বৃদ্ধি তার প্রতিকারেরও উপায়।


কিন্তু সমাজে মানুষ আজও মহিলাদের ব্যাবহৃত প্যাড এর মতই সরাসরি দোকান থেকে নিরোধ বা কন্ডোম কিনতে কুণ্ঠা বোধ করেন।আর যার কারণে উপায় থাকা সত্ত্বেও মানুষ তা না মেনে ব্যক্তিসহ,সমাজ এবং দেশের অমঙ্গলের কারণ নিজেই হয়ে ওঠে।
            সম্প্রতি তেশোরা সেপ্টেম্বর দিনো মরিয়ার প্রযোজনায় এবং সাতরাম রামানির পরিচালনায় এমনি একটি সামাজিক সতর্কতা মূলক ছবি “হেলমেট” মুক্তি পেল Zee5 প্লাটফর্মে ।ছবিটিতে মানুষের জীবনে নিরোধের বা কন্ডোমের প্রয়োজনীয়তাকে তুলে ধরা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয়তা থাকা সত্ত্বেও কিভাবে মানুষ শুধুমাত্র সামাজিক লজ্জার কারনে তা এড়িয়ে যায় সেই ঘটনাও তুলে ধরা হয়েছে।

              ছবিটি আসলে একটি কমেডি ছবি । কিন্তু কমেডির মাঝেও একটা সতর্কতা মূলক বার্তা প্রথম থেকেই ছিল ছবিটির মধ্যে। প্রধান চরিত্রে প্রথমবার দেখা গেছে অপারশক্তি খুরাণাকে লাকির চরিত্রে। এছাড়াও দেখা গেছে অভিষেক ব্যানার্জী কে সুলতানের চরিত্রে , আশিস ভার্মা কে মাইনাস এর চরিত্রে , অনুরিতা ঝা কে রূপালির চরিত্রে।


ছবিটি শুরু হয় লাকি নামের একটি অনাথ ছেলের বিয়েবাড়িতে ব্যান্ডে গান গেয়ে অর্থ উপার্জন এর গল্প দিয়ে।তার পর প্রেমে পড়া এবং গতানুগতিক ছবির গল্পের মত বাড়ি থেকে মেনে না নেওয়া , এইভাবে গল্পটি এগোতে থাকে। এরপরই গল্পের মোড় ঘোরে। মেয়ের বাড়িকে রাজি করার উদ্দেশ্যে নিজস্ব ব্যান্ড খোলার জন্য লাকির এবং দেনার টাকা মেটানোর জন্য সুলতানের হাতে সময় খুব কম ছিল, কিন্তু অর্থের প্রয়োজন ছিল প্রচুর।

তাই অভাবে পড়ে লাকি তার দুই বন্ধু মাইনাস এবং সুলতানকে সঙ্গে নিয়ে একটি মাল ভর্তি লড়ি লুঠ করে, তাতে অনেক বাক্সভর্তি মোবাইল থাকবে ভেবে।কিন্তু ঘটনাচক্রে তাদের হাতে আসে কন্ডোম ভর্তি বাক্স। কিন্তু ভারতের মত দেশে এত বাক্স কন্ডোম বিক্রি করা সহজ নয় । তাই তারা বুদ্ধি করে হেলমেট পরে গোপনে তাদের ব্যবসা চালাতে থাকে। সেখান থেকেই ছবির নামকরণ হেলমেট। ব্যাবসা করতে গিয়েই তাদের নজরে আসে কন্ডোম এর প্রয়োজনীয়তা থাকা সত্ত্বেও তা কিভাবে মানুষ এড়িয়ে যায় লোকলজ্জার ভয়ে।


ছবিটির মাধ্যমে একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা মানুষকে দেয়ার উদ্দেশ্য ছিল যা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কিন্তু ছবিটি গঠনগত দিক থেকে আরো পরিপাটি হলে এবং ছবির গল্পটি আরো একটু জোরালো হলে তা দর্শকের মনে আরো বিশেষভাবে জায়গা করে নিতে পারত।

 

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x