ময়ূরী সাহাকে চিনতে পারছেন তো? হ্যাঁ ঠিকই ধরেছেন স্টার জলসার সুপার সিঙ্গার প্রতিযোগিতার ফার্স্ট রানার আপ হয়েছিলেন ময়ূরী।
ছোটবেলা থেকেই গান গাওয়ারর ইচ্ছে ছিল ময়ূরীর মধ্যে। তিনি যখন ক্লাস ফাইভে পড়েন তখন পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তীর স্ত্রী শ্রীমতি চন্দনা চক্রবর্তীর কাছে শাস্ত্রীয় সংগীত শেখা শুরু করেন। দীর্ঘ ১০ বছর ময়ূরী শ্রীমতি চন্দনা চক্রবর্তীর কাছেই শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নেন। এরপর পন্ডিত অজয় চক্রবর্তীর ছাত্র দেবর্ষি ভট্টাচার্য্যের কাছে তিনি ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীতে তালিম নেওয়া শুরু করেন।

তুমি ছোটবেলা থেকেই শাস্ত্রীয় সংগীতের উপরে গভীর মনোযোগ সহকারে তালিম নিয়েছিলেন তাই কমার্শিয়াল মিউজিকের প্রতি তার অভ্যাস বা আগ্রহ কোনটি ছিল না।
ময়ূরী যখন সুপার সিঙ্গার রিয়েলিটি শোতে অডিশন দেন এবং সিলেক্ট হন তখন তিনি বুঝতে পারেন শাস্ত্রীয় সংগীতের সাথে সাথে কমার্শিয়াল মিউজিক এই ধরনের প্রতিযোগিতায় শেখাটা খুবই জরুরী।
তিনি বলেন রিয়েলিটি শো নিয়ে মানুষের মনে একটা মিথ রয়েছে। কিন্তু একটি রিয়েলিটি শো একজন শিল্পীকে বা গায়িকা কে গায়িকা থেকে ভালো পারফর্মার হতে শেখায়।
তিনি বলেন সুপার সিঙ্গার রিয়েলিটি শোতে অংশগ্রহণ করে তিনি ক্যামেরা কিভাবে সামলাতে হয়, এক থেকে কিভাবে দর্শকের সামনে বিচারকের সামনে গান গাইতে হয়, কিভাবে এই মানসিক চাপ নিয়ে ভালো পারফর্ম করা যায়, কিভাবে মনের জড়তা কাটানো যায় তা তিনি এখান থেকে শিখতে পারেন।

তিনি বলেন এই রিয়েলিটি শোর গ্রুমার প্রান্তিক সুর, শোভন গাঙ্গুলী, তৃষা পাড়ুই তাদেরকে যথেষ্ট ভালো ভাবে গ্ৰুম করেন এবং তাদের তাদেরকে গান শেখানোর পাশাপাশি কিভাবে পারফর্ম করতে হবে, কিভাবে মেন্টালি প্রিপেয়ার করতে হবে সমস্ত বিষয় নিয়ে তাদের পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বোঝাতেন এবং আলোচনা করতেন।
বিচারকদের মধ্যে কবিতা কৃষ্ণমূর্তি এর কাছ থেকে তিনি বেশ কিছু টিপস পান বলেও জানান। ময়ূরী জানান “কবিতাজী আমায় খুব স্নেহ করতেন এবং বিভিন্ন বলিউডি গান গাওয়ার সময় আমাকে অনেক টিপস দিয়েও সাহায্য করেছেন এবং সব সময় আমায় ইন্সপায়ার করতেন”।
তিনি আরো বলেন “সংগীত শিল্পী কুমার শানু খুবই হালকা মেজাজে থাকতেন এবং প্রত্যেকটি প্রতিযোগীর সাথে ভালোভাবে কথা বলছেন তাদেরকে গানের ছোটখাটো বিষয়ে টিপসও দিতেন”।
ময়ূরী এও জানান একজন ভালো গায়িকা হতে গেলে গান প্র্যাকটিস করার সাথে সাথে ফিজিক্যাল ফিটনেস থাকাটাও খুব জরুরি। এই ফিজিক্যাল ফিটনেস গানের মাত্রাকে আরো বাড়িয়ে তোলে।একজন শিল্পীকে ভাল পারফর্মার হিসেবে তুলে ধরে। ময়ূরী এখন প্রতিদিন নিয়ম করে রেওয়াজ করার সাথে সাথে যোগ ব্যায়াম এবং শরীর চর্চা করে থাকেন।
তিনি বর্তমানে সংগীতশিল্পী শ্রী রথীজিৎ ভট্টাচার্য্যের অ্যাকাডেমিতে গান শেখেন। তিনি শ্রী দেবর্ষি ভট্টাচার্য্যের কাছেও ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নিচ্ছেন।

ময়ূরীর কাছে তার আগামী প্রজেক্ট সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন অতিমারির কারণে বেশ কিছু কাজ বন্ধ রয়েছে বা পিছিয়ে গেছে। ময়ূরী ‘দেব মিউজিক’ এবং ‘এঞ্জেল ডিজিটাল’ এর সঙ্গে চুক্তিতে রয়েছেন। ‘দেব মিউজিকে’র তরফ থেকে একটি ছবিতে তিনি গান গেয়েছেন কিন্তু ছবিটি এখনো মুক্তি পাইনি।সবকিছু ঠিক থাকলে পুজোর আগেই ইউটিউবে তার গাওয়া একটি গান আসতে চলেছে। এছাড়া ইউটিউবে তার নিজের গাওয়া বেশ কয়েকটি গান আসতে চলেছে যেখানে তিনি নিজেই সুর করেছেন। ময়ূরী জানান তিনি একজন ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্টিস্ট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চান।