আজ আমরা কথা বলবো জি বাংলা সারেগামাপা এর অন্যতম জনপ্রিয় প্রতিযোগী গায়ক এবং গিটারিস্ট অভিষেক নট্টর কথা।
খুব ছোটবেলা থেকেই এক সঙ্গীতময় পরিবেশে জন্ম এবং বেড়ে ওঠা অভিষেকের।তার ঠাকুরদা শ্রী রতন নট্ট একজন স্বনামধন্য হারমোনিয়াম এবং তবলা বাদক। তার জেঠু মশাই শ্রী অচিন্ত্য নট্ট একজন জনপ্রিয় তবলিয়া। তার বাবা শ্রী অরূপ নট্ট একজন জনপ্রিয় তবলিয়া। তার মা লীনা নট্ট একজন শাস্ত্রীয় সংগীত শিল্পী। বোঝাই যাচ্ছে তিনি এক সংগীতময় পরিবেশের মধ্যে বেড়ে ওঠেন।
তিনি ছোটবেলায় মা এবং দাদুর কাছ থেকে শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম নেন। অভিষেক নর্থ ইন্ডিয়ান ক্লাসিক্যাল ঘরানার শ্রী মোহনলাল মিশ্রার আছে এবং তার পুত্র শ্রী দীপক মিশ্রার কাছে (বেনারস ঘরানার) তালিম নেন।

অভিষেক শ্রী অজিত হালদার এর কাছে কলকাতা ঘরানার তালিম নেন।
শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের তালিম ই নয় অভিষেক গিটার বাজানোও শেখেন। তিনি রাজীব পাল, নেপাল সাউ এবং মধু মুখার্জীর কাছে গিটার শেখেন।
অভিষেক রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘খেয়াল’ নিয়ে মাস্টার্স পাশ করেন। অভিষেকের বোন জুই নট্টও ‘মিউজিক’ নিয়ে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স পড়ছেন।
অভিষেক এর একটি ব্যান্ড রয়েছে সেই ব্যান্ডের নাম ‘Luckshya’। এই ব্যান্ডের বেস গিটারিস্ট হলেন বাচস্পতি চক্রবর্তী, ড্রামার হলেন তমাল মন্ডল, গিটারিস্ট হলেন টুটুল মুখার্জী, কীবোর্ড বাজান মনোজিৎ সাহা, এবং পারকিউশনিস্ট হলেন পর্ণব রায় অভিষেক হলেন ভোক্যালিস্ট। তবে বলে রাখা ভালো তমাল এবং পর্ণব দুজনেই পারকিউশনিস্ট দুজনেই অদল-বদল করে পারকিউশন বাজান।

অভিষেক শুধু দেশের মধ্যেই নয় দেশের বাইরের যেমন থাইল্যান্ড, সাউথ আফ্রিকা তেও প্রচুর শ্যো করেছেন
অভিষেক গিটারে সরগম বাজান, স্কেটিং করেন যা ভারত খুব কম শিল্পী করে থাকে। তিনি একই সাথে স্টেজে পারফর্ম করার সময় গিটারে সরগম বাজান এবং গানও একসাথে তালে তাল মিলিয়ে সুন্দরভাবে সিনক্রোনাইজ করে।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট কাজ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন নিজের অরিজিনাল, অথেন্টিক,ফোক, গজল্, রিঅ্যারেঞ্জ করে কাজ করে চলেছি। ইনস্ট্রুমেন্টাল মিউজিক বিশেষ করে গিটার নিয়ে অনেক রকমের এক্সপেরিমেন্ট করার খুব ইচ্ছা আছে এবং করছিও। নাক কান বুজে ভালো কাজ করে যাব, যারা শুনতে চায় তাদের জন্য এবং যারা শুনতে চায় না তাদের মনেও নিজের জায়গা তৈরি করে নিতে চাই।
তিনি বলেন আমাদের কলকাতায় এমন একটা ‘কোক স্টুডিও’ বা ‘এমটিভি আনপ্লাগড’ এর মত যদি কোন একটা প্লাটফর্ম পাওয়া যায় তাহলে প্রচুর পরিমাণে ভালো ভালো ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্টিস্ট তাদের ট্যালেন্ট কে খুব সুন্দর ভাবে বিপুল পরিমাণ মানুষের সামনে তুলে ধরতে পারবে।

ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্টিস্টদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, “যদি সত্যি মন থেকে মিউজিক ভালোবাসো, যদি সত্যিই মিউজিশিয়ান হতে চাও তাহলে হাল ছেড়ো না, প্রচুর প্র্যাকটিস করো এবং নিজের কাজের প্রতি আস্থা রাখো”।
সারেগামাপা এর অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “সারেগামাপা এর এক্সপেরিয়েন্স খুবই ভালো। সেখানে গিয়ে আমি নতুন নতুন টেকনিক শিখতে পেরেছি। এতবড়ো স্টেজে পারফর্ম করেছি, গিটার বাজিয়েছি, আমার কাছে এটা একটা স্বপ্নের মতো ছিল যেটা পূরণ হয়েছে। এতো স্বনামধন্য এবং গুণী মানুষদের বিচারক হিসেবে পেয়েছি, তাদের সান্নিধ্য পেয়েছি, তাদের আশীর্বাদ তাদের গাইডেন্স আমাকে অনেক সাহায্য করেছে। গ্রুমাররাও বিভিন্ন দিক থেকে আমাদের গাইড করেছেন “।

মিউজিক সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন মিউজিক এমন একটা জিনিস যেটা শুনে অনুভূতি হয়, কিন্তু কি রকম অনুভূতি হয় সেটা প্রত্যেকটি শিল্পীর ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন হয়। মিউজিক শুনলেই ভালো মিউজিক তৈরি করার অনুপ্রেরণা পাওয়া যায়।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন তার বেশ কয়েকটি ইন্ডিপেন্ডেন্ট গান আসতে চলেছে। একটি পাঞ্জাবি গজলের অডিয়োর কাজ হয়ে গেছে তবে ভিডিওর কাজ বাকি আছে। ‘আজ জানে কি জিদ না করো’ এইগানটি তারা নতুন করে রিঅ্যারেঞ্জ করছেন যার অডিও রেকর্ড হয়ে গেছে কিন্তু ভিডিও শ্যুট বাকি আছে।