স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতা দিগন্ত দে দক্ষিণ কোরিয়ায় অনুষ্ঠিত ‘বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’এ নির্বাচিত হয়েছে। প্ল্যাটফর্ম বুশান এশিয়ার স্বাধীন চলচ্চিত্র নির্মাতাদের অসামান্য অবদানের জন্য একটি উচ্চ প্রশংসিত বৃত্তি যা বিশ্বচলচ্চিত্রের মানের সমকক্ষ। আজ অবধি পরিচালক দিগন্ত দে ছাড়া কোন বাঙালি পরিচালক এই বৃত্তি বা স্কলারশিপ পাননি। প্ল্যাটফর্ম বুসান সেগমেন্ট 2016 সাল থেকে শুরু করা হয় এবং প্রত্যেক বছর মারাঠি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি থেকে কেউ এই স্কলারশিপ পেত। দিগন্ত দে প্রথম বাঙালি পরিচালক যিনি এই সম্মান এবং স্কলারশিপ পান বাংলা থেকে। এবছর ‘এশিয়ান ফিল্ম মার্কেট’ প্রজেক্টে অনেক বাঙালি পরিচালক যেমন বৌধায়ন মুখার্জি, সুমন ঘোষ আমন্ত্রণ পান তাদের নিজেদের ছবি দেখানোর জন্য।
বুশান বিশ্বের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র উৎসব যেখানে এই স্বাধীন পরিচালক দিগন্ত দে নির্বাচিত হয়েছে। পরিচালক দিগন্ত দে’র ‘মনসুন ক্লিপস‘ ছবিটি একটি স্মার্টফোন থেকে শুট করা হয়েছে। কোন অত্যাধুনিক দামি ক্যামেরা বা অন্য কোন যন্ত্রপাতি ব্যবহার এই ছবিতে হয়নি। এই ছবিটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব (বি.আই.এফ.এফ ২০১৯)এ এশিয়ান ফিল্ম মার্কেট এ হবে।
এই ছবিটির গল্প হল দুজন মৃত মানুষের আত্মার কথোপকথন। যেখানে একজন ভারতীয় বিমান বাহিনীর পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ হোসেন এবং অপরজন তার স্ত্রী ইলা। এম.আই. জি টুয়েন্টি ওয়ান যুদ্ধবিমান এর রুটিন ফ্লাইটে মোহাম্মদ হোসেন গুরুতরভাবে আহত হন এবং এর ফলে তিন দিন ধরে তিনি জীবন মৃত্যুর সঙ্গে লড়তে লড়তে শেষ পর্যন্ত মারা যান। হোসেন একজন ভালো কবি ছিলেন। তিনি তাঁর শেষ কবিতাটি তার স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন যে ইলা এই সমাজ দেশ বিশ্বাস ভালোবাসা ধর্ম দিন থেকে দর্শক অনবরত বদলে যাচ্ছে। হুসেন এবং ইলা দুই পৃথক ধর্মের মানুষ ছিলেন। তাই হোসেন চান মৃত্যুর পর ইলার সঙ্গে যেন তার সেই স্বর্গে দেখা হয় যেখানে এইসব সংকীর্ণ গোঁড়ামি, নিচু মানসিকতার মাপকাঠি থাকবে না এবং তারা চিরতরে সুখে শান্তিতে একসাথে নিশ্চিন্তে থাকতে পারবে। এই ছবিটি হিন্দি, উর্দু এবং ইংরেজি ভাষায় দেখানো হবে।