১. বহুদিন পর সিধু-পটা জুটি একসঙ্গে কাজ করে কি অনুভূতি হচ্ছে?কি নস্টালজিয়া কাজ করছে?
উঃ যোগাযোগ তো ছিল,আড্ডাও ছিল,গানবাজনা ও ছিল । কিন্তু সেটা ফর্মাল কোন রুট পাচ্ছিল না।সেই জায়গা থেকে বলব মনটা শান্ত হয়েছে।
২. ক্যাকটাস এর শুরুটা কিভাবে?
কোন উন্মাদনা কাজ করেছিল, ব্যান্ডটা তৈরির পেছনে যে গল্পটা সেটা বলুন?
উঃ রক মিউজিক ভালো লাগা সেটা অন্যতম একটা কারণ ছিল,আর ইংরেজি লিরিক না বুঝতে পারা আর একটা কারণ ছিল,তিন নম্বর কারণ ছিল এই খবরটা পাওয়া যে – রক মিউজিক শুধু ইংরেজি গান নয়,জার্মান রক ও হয়,ফ্রেঞ্চ রক ও হয়,চাইনিজ রক ও হয় তো তাহলে কেন বাংলায় হবে না?করলে আমরাই করব,কারণ রক মিউজিকটা এত ভালো লাগছে।
৩. পটা দার সঙ্গে আলাপ কিভাবে হয়েছিল?
উঃ পটার সাথে আমার আলাপ একটি কম্পিটিশনে।সেই কম্পিটিশনটা আমি জাজ করতে গেছিলাম এবং পটা সেখানে পার্টিসিপেন্ট ছিল।পটা খুবই ভাল গেয়েছিল । কিন্তু আমার বিচারে পটা সেকেন্ড হয়েছিল।তার পর কম্পিটিশন এর পর পটা এসে আমায় স্ট্রেইট মুখের ওপর জিজ্ঞেস করেছিল “আমি কেনো ফার্স্ট হলাম না?”তো এটা খুব স্ট্রাইকিং লেগেছিল যে একজন পার্টিসিপেন্ট এইভাবে এসে এতটা কনফিডেন্টলি বলতে পারছে কথাটা।এইভাবে আলাপ।তারপরে ১৯৯৯ এ ফার্স্ট এলবাম যখন রিলিজ হয়ে গেছে তখন আমি ক্যাকটাস থেকে একটা ব্রেক নিলাম পোস্ট গ্রেজুয়েশন এন্ট্রান্স এর পড়াশোনার জন্য।তখন পটাকে প্রস্তাব দেয়া হয় সিধুর জায়গায় গাওয়ার।এভাবেই পটার “ক্যাকটাস” এ প্রবেশ।
৪.এইবার আসা যাক নতুন যে গানটি বেরোলো “ছি: ছি: ছি:”- মানুষ তো রাজনীতির অন্ধকার দিকটি জেনেও সব মেনে নিচ্ছে।তাই এই গানের উদ্ভব। তো এই গানটি কতটা মানুষের বোধোদয় ঘটাবে বলে আপনি আশাবাদী?
উঃ বোধোদয় ঘটানোতো বিশাল ব্যাপার।সেটা বড় বড় মনীষীরা পারেননি,রবীন্দ্রনাথ পারেননি।সেখানে আমি একটা গান দিয়ে বোধোদয় ঘটাবো এরম ভাবিনা।তবে ডেফিনেটলি এটার সাথে কিছু মানুষ আকাত্মবোধ করবে । সেটা হয়তো হচ্ছে সেজন্যই গানটার রেসপন্স এত ভালো।এখনো সাতদিন পেরোয় নি ছ দিন মত পেরিয়েছে আমরা প্রায় আড়াই লাখ ভিউস পেয়েছি ফেসবুক , ইউটিউব মিলিয়ে।এই যে এত মানুষ দেখছে এত শেয়ারিং হচ্ছে তো সেটা কিছু মানুষ অবশ্যই একাত্মবোধ করছে বলেই।
৫.ফিল্মের বাইরে যে সমস্ত আধুনিক গান, ব্যান্ডের গান বা বলা ভাল ইন্ডিপেন্ডেন্ট গান যেগুলো পুজোয় নতুন এলবাম বা ক্যাসেট আকারে বেরোত,পাড়ায় পাড়ায় বাজার একটা চল ছিল।সেগুলো বিগত কয়েক বছরে ফিল্মের গানের তলায় চাপা পড়ল কেন আপনার কি ধারণা?
উঃ সেটা কিছু ফিল্ম প্রোডিউসার দের স্ট্র্যাটেজি ,যারা সিনেমার গানটাকে সম্পুর্ন বিজনেস পার্পাসেই চাপিয়ে দিয়েছে।কারণ তারা একটা গান বানাতে বা তার পিকচারাইজ করতে অনেক খরচা করছে সেই অনুযায়ী তাদের গান গুলো হিট হচ্ছিলনা বরং ব্যান্ডের গান কিংবা লোপামুদ্রার গান কিংবা রাঘবের গান চলছিল।সেটা ওনারা মানতে চাননি বা মানতে পারেননি কাজেই ওনারা একদম পলিসি করে যাবতীয় এফ.এম স্লট এবং টেলিভিশন যেগুলোতে বাংলা গান দেখানো বা শোনানো হয় সেই সমস্ত স্লট ওনারা কিনে নিয়েছেন।এটা দীর্ঘদিনের ইতিহাস।
৬. এই সমস্ত আধুনিক গান গুলো ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমে কতটা ফিরিয়ে আনা সম্ভবপর বলে তুমি মনে করছ?আর সেটা করতে গেলে কি কি বিষয় মাথায় রেখে এগোতে হচ্ছে নতুন করে?
উঃ এটা ফিরলে ডিজিটাল প্লাটফর্মের মাধ্যমেই ফিরতে পারবে।কারণ এখানে কারোর দাদাগিরি চলবেনা , এইসব প্রোডিউসারদের দাদাগিরি।কোন এফ.এম কারোর গান বাজলো কি বাজলোনা তাতে কারো আর কিছুই এসে যায়না।তো ডিজিটাল প্লাটফর্ম সেই স্বাধীনতাটা দিয়েছে ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্টিস্টদেরকে।জায়গাটা তৈরি হয়ে গেছে।- এবার কি কি মাথায় রাখতে হবে বলতে অডিও কোয়ালিটি এবং তার ভিজ্যুয়াল কোয়ালিটি সেটা ঠিক হতে হবে।টেকনিক্যালি ঠিক হতে হবে এক নম্বর। দু নম্বর হল পয়সা দিয়ে তো আমরা ফিল্মের সঙ্গে কম্পিট করতে পারবো না।আমি কতটা বুদ্ধিদীপ্ত ভাবে জিনিসটাকে ট্রিট করছি তার ওপর নির্ভর করছে।যেখানে অর্থ নেই সেখানে ভাবনা আছে তো অর্থ না থাকলেও সেটাকে ভাবনা দিয়ে পোশাতে হবে।
৭. বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি শিল্পীদের ওপর কি প্রভাব ফেলছে বলে তোমার মনে হয়?ভবিষ্যতে তার কি ফলাফল হতে পারে?
উঃ শিল্পীরা রাজনৈতিক দলের কুক্ষিগত হয়ে যাচ্ছে।কাজেই সব শিল্পীর ওপরেই একটা রাজনৈতিক দলের তকমা পরে যাচ্ছে।একজন শিল্পীর যে স্বাধীন চিন্তা আছে সেই স্বাধীন চিন্তায় একটা লেবেল লাগিয়ে দেয়া হচ্ছে।সেটা শিল্পের জন্য এবং শিল্পীর জন্য কারোর জন্যই ভালো না।- ৮.ক্যাকটাস একটি ঐতিহ্যবাহী ব্যান্ড।বহুদিন ধরে সেই জায়গা টা ক্যাকটাস তৈরি করে নিয়েছে।তাই আজ ক্যাকটাস এর একটা গান বেরলে যেকোন চ্যানেল,মিডিয়া এগিয়ে আসে ইন্টারভিউ এর জন্য।
- কিন্তু যারা নতুন কাজ করছে এই প্লাটফর্মকে কাজে লাগিয়ে উঠতে চাইছে , অনেক সময় কন্টেন্ট ভালো হলেও তাদের ভিউস আসছে না।তারা হতাশ হচ্ছে।তাদের জন্য কি বার্তা আপনার?
- উঃনিরজ শর্মা নাম টা আমরা কেউ জানতামনা।সে নিজেকে প্রমাণ করে দিয়েছে তার কাজে। তার নাম টা আমরা জানতে বাধ্য হয়েছি।কাজেই যেকোনো ফিল্ডে যেকোন নিউ কামার এর কাজই হচ্ছে হার্ড ওয়ার্ক। হার্ড ওয়ার্ক করে তুমি তোমার ভালো প্রোডাক্টটা দাও লোকজন নিশ্চই গ্রাহ্য করবে।
- ৯. ছি: ছি: ছি: গানটা তৈরির অভিজ্ঞতা টা কি ছিল?
উঃ যেমন হয় আরকি গান টা বানিয়ে ব্যান্ড কে শোনালাম ব্যান্ডের পছন্দ হল।অন্য একটা গান নিয়ে আমাদের প্রস্তুতি চলছিল একটি কম্পসিশন নিয়ে।এই কম্পসিশনটা শোনার পর সবাই বলল আগে এই গানটা হোক এবং গানটা আমরা ১৫ ই আগস্টের আশেপাশেই রিলিজ করব।সেই হিসাবেই গানটা রেডি করলাম।
১০. তাহলে এবার কি আমরা সিধু-পটা জুটির থেকে অনেক গান শোনার আশা রাখতে পারছি?একসঙ্গেই কাজ করার সিদ্ধান্ত হল এবার থেকে?
উঃ হ্যাঁ,সিধু-পটা একসঙ্গে “ক্যাকটাস”রিফর্ম করেছে ২০২১ এর জানুয়ারি তে।যখন রিফর্মই করলাম এত কিছুর পরে তো একসঙ্গে কাজ চলবেতো বটেই।
১১. নতুন কি কি কাজ (গান) আমরা এক্সপেক্ট করতে পারি।কি কি বিষয় এর ওপর কাজ করার ইচ্ছা আছে?
উঃ এটা যেমন রক নাম্বার হল পরের গানটা একটা অন্যরকম নাম্বার করার ইচ্ছা।একটু সোলফুল একটা গানের প্লানিং চলছে।