টেলিভিশনের ভেতর থেকেও কি কিছু দেখা যায় ?

বাড়িতে টিভি আছে? নিশ্চয়ই আছে। খুব সাবধান টিভির ভেতর থেকে বাইরে জিনিসও অনেক সময় দেখা যেতে পারে অর্থাৎ আপনাকেও কেউ দেখছে টিভির ভিতর থেকে। খুব সাবধান থাকবেন। কথাগুলো কেন বলছি? জানতে হলে বাংলাদেশের নবাগত ওয়েব প্লাটফর্ম ‘চরকি’র একটি অ্যান্থোলজি ওয়েব সিরিজ ‘ঊনলৌকিক’ এর চতুর্থ গল্প ‘হ্যালো লেডিজ‘ আপনাকে দেখতে হবে।
‘হ্যালো লেডিস’ মূলত একটি অনুষ্ঠান যেখানে মহিলাদের কে একত্রিত করে অনুষ্ঠিত হয় গেম শো। এই অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনার দায়িত্ব ছিল সিসিলির উপর। ‘সিসিলি’র চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী রাফিয়াত রশিদ মিথিলা। কিন্তু সমস্যাটা হলো সিসিলি সঞ্চালনা করতে করতেই যখন ক্যামেরার লেন্স এর দিকে তাকাতে তাকাতে হঠাৎ যেন তাঁর মনে হয় মানুষের ঘরে কি হয় তা সে দেখতে পায় সব তাঁর চোখের সামনে ভেসে ওঠে। তিনি কথা গুলো একজনকে বলেন কিন্তু সে তাঁর কথা না বুঝতে পেরে তাকে বলে যে অনেকদিন তিনি ঠিকমতো ঘুমান নি তাই তিনি এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তাই তাঁর ভালো করে বিশ্রাম নেওয়া উচিত।
সিসিলির চরিত্রে মিথিলা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে অভিনয় করেছে। তিনি সিসিলির চরিত্রটিকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। এই গল্পটিতে তাঁর এক্সপ্রেশন সত্যিই খুবই সুন্দর এবং নিখুঁত।
এই গল্পে আশরাফের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইরেশ যাকের। বাংলাদেশের প্রয়াত কিংবদন্তি অভিনেতা আলী যাকেরের পুত্র। ইরেশ যাকেরের পরিবারের অধিকাংশ সদস্যই অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত। ইরেশ যাকের সম্পর্কে মিথিলার বোনের স্বামী অর্থাৎ তাঁর জামাইবাবু। সৃজিত মুখার্জী পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’ তপন সিকদার এর চরিত্রে প্রথমে তাঁর অভিনয়ের কথা ছিল কিন্তু পরবর্তীকালে অনির্বাণ চক্রবর্তী এই চরিত্রটিতে অভিনয় করেছে। ইরেশ যাকের অত্যন্ত দক্ষ একজন অভিনেতা এই গল্পটির মধ্যে দিয়ে আরও একবার প্রমাণিত হলো। তার এক্সপ্রেশন, তার ডায়লগ ডেলিভারি, অনবদ্য। কিছু কিছু এমন দৃশ্য বা মুহূর্ত রয়েছে যেখানে তাঁর অভিনয় আপনাকে মুগ্ধ এবং অবাক করবে। কিছু কিছু দৃশ্যে তাঁর অভিনয় আপনার চোখের পলক অন্যদিকে সরাতে দেবে না। তিনি সত্যিই অত্যন্ত দক্ষ অভিনেতা। এই গল্পটিতে তাঁর অভিনয় সকলকে ছাপিয়ে গেছে।
এই গল্পে পরিচালক রবিউল আলম রবি যে ধরনের ভিজুয়াল ট্রিটমেন্ট দেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। প্রত্যেকটি গল্প তাঁর হাতের ছোঁয়ায় অন্য এক মাত্রা পেয়েছে। ঊনলৌকিক’ অ্যান্থলজি সিরিজের প্রত্যেকটি গল্প তিনি অসাধারণ দক্ষতার সঙ্গে সকলের সামনে তুলে ধরেছেন। গল্পটিতে তিনি অত্যন্ত সরলতার সাথে অনেক কঠিন জিনিসকে সহজভাবে আমাদের সামনে উপস্থাপিত করেছেন। তিনি অত্যন্ত নিখুঁতভাবে কঠিন বার্তাকে সহজভাবে উপস্থাপিত করেন।
এই গল্পটি শিবব্রত বর্মন এর একটি গল্প থেকে নেওয়া হয়েছে।
এই গল্পটির চিত্রগ্রহণে দায়িত্ব সামলেছেন ইশতিয়াক হোসেন। উনি দক্ষতার সঙ্গে যেভাবে এই স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রত্যেকটি দৃশ্যকে লেন্স বন্দী করেছেন তার দর্শকেরা দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়ে যাবেন।
রাশিদ শরীফ শোয়েবের আবহসংগীত এই গল্পটিকে এক অন্য মাত্রা দিয়েছে। এই গল্পটির আবহসংগীত চিত্রনাট্য এবং দৃশ্যায়নের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে মিশে গেছে এবং যার ফলে দৃশ্য এবং আবহসংগীত আপনাকে সেই অনুভূতি গুলি প্রদান করবে যেগুলি আপনারা এই ধরনের ছবিতে খুঁজে থাকেন কিন্তু পাননা।
এই ছবিটি ‘এ ফিল্ম সিন্ডিকেট প্রোডাকশন’ কর্তৃক প্রযোজিত। এই গল্পটির প্রযোজনা করেছেন সালেহ সোবহান অনীমনির্বাহী প্রযোজক মীর মোকাররম হোসেন, তানিম নূর এবং রুমেল চৌধুরী।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x