মুসকান জুবেরীর রেস্তোরাঁ ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’র শুভ উদ্বোধন আগামী ১৩ই আগস্ট, হইচই তে ভার্চুয়ালি দেখতে পাবেন।

“আপনি কি জেনারেলি কোন প্রমাণ ছাড়া শুধুমাত্র অনুমানের ভিত্তিতে ভদ্রমহিলাদের ছেলেধরার উপাধিতে ভূষিত করেন” সংলাপটি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনের। বাঁধন পরিচালক সৃজিত মুখার্জীর আগামী ওয়েব সিরিজ ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’ তে প্রধান চরিত্র মুসকান জুবেরীর ভূমিকায় অভিনয় করছেন। এই টিজারটিতে তার উপস্থিতি দর্শকদের সম্মোহিত করবেই। এই টিজারটিতে তিনি যেভাবে সংলাপটি বললেন এবং তার টিজারটির শেষের দিকে তার সেই ভয়ঙ্কর লুক সত্যিই দর্শকদেরও হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে তুলবে। মুসকান জুবেরীর চরিত্রে তাকে ছাড়া আর অন্য কাউকে ভাবা যায় না, এর সবথেকে বড় কৃতিত্ব কিন্তু সৃজিত মুখার্জী কে দেওয়া উচিত। তিনি প্রত্যেকটি চরিত্রে যাদেরকে নির্বাচন করেছেন তারা প্রত্যেকেই অসাধারণ অভিনয় করবেন বলেই আশা রাখি।
এই টিজারটির আরেকটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এই টিজারটির আবহসংগীত। সঙ্গীত পরিচালক জয় সরকার এত সুন্দর আবহসংগীত নির্মাণ করেছেন এই ওয়েব সিরিজটির দৃশ্যায়ন আরো মুগ্ধকর এবং রোমাঞ্চকর করে তুলেছে। জয় সরকার এই ওয়েব সিরিজটির আবহসংগীত সত্যি দর্শকদের মনে আলাদা জায়গা করে নেবে। তানসেনের তানপুরা, ফেলুদা সিরিজ এরপর এই কাজ। তার প্রত্যেকটি কাজেই তার আগের কাজকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তার এই মুগ্ধকর কাজের জন্য সত্যিই তাকে কুর্নিশ জানানো উচিত।
রাহুল বোস এখানে নিরুপম চন্দর চরিত্রে অভিনয় করেছেন এবং আতর আলীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় অভিনেতা অনির্বাণ ভট্টাচার্য্য। খরাজ খাসনবিস এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন অঞ্জন দত্ত এবং তপন শিকদার এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনির্বাণ চক্রবর্তী‌।
এই ওয়েব সিরিজটি মূল গল্পটি হল ঠিক এমন :
‘সুন্দরপুর’ নামক জায়গায় একটি রেস্তোরাঁ আছে যার নাম ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’। এই রেস্তোরাঁর খ্যাতি খুব তাড়াতাড়ি সমগ্র দেশ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। নিরূপম চন্দ নামে এক সাংবাদিকের মনে আগ্রহ জন্মায় রেস্তোরাঁর এরকম নামের কারণ এবং ওই রেস্তোরাঁর বিপুল জনপ্রিয়তার কারণ কি? তিনি সিদ্ধান্ত নেন যে তিনি নিজেই গিয়ে সরোজমিনে এই ব্যাপারটি দেখবেন। এই কারণে তিনি ওই রেস্তোরাঁয় যান। ওই রেস্তোরাঁয় গিয়ে ওই রেস্তোরাঁয় বেশ কয়েকটি বিশেষত্ব তার চোখে পড়ে-
প্রথমত ওই রেস্তোরাঁর খাবারের নাম অন্যরকম এবং যথেষ্ট আকর্ষকও বটে, যেমন- ‘নিরুপম নাল্লি নীহারি’, ‘মুস্কানি মিঠাই’, ‘আতর বিরিয়ানি’, ‘খাসনবিসের খো সুয়ে’, ‘শিকদার শিক কাবাব’।
দ্বিতীয়ত ওই রেস্তোরাঁর পরিবেশ, বসার ব্যবস্থা আর পাঁচটা রেস্তোরাঁর থেকে আলাদা এবং সেখান রবীন্দ্র সংগীত শুনতে পাওয়া যায়।
তৃতীয়ত, এই রেস্তোরাঁর খাবার খুবই সুস্বাদু এবং লোভনীয়। ওই খাবারের ঘ্রাণ এতটাই সুন্দর যে মানুষ খাওয়ার সময় পৃথিবীর যে কোনো দুশ্চিন্তা ভুলে একমনে ওই খাবারের প্রতি মনোযোগ দেয় এবং সুস্বাদু খাবারের স্বাদ আস্বাদন করে।
চতুর্থত সেখানকার খাবারের দাম অত্যন্ত কম এবং সেই খাবারের স্বাদ, গন্ধ এবং উপস্থাপনা খুবই সৃষ্টিশীল, মৌলিক এবং অভিনব।
এরপর তার মনে এই রেস্তোরাঁর মালিক মুসকান জুবেরীর সম্পর্কে জোড়ালো সন্দেহ জাগে এবং তিনি স্থানীয় পুলিশ ইনফর্মার আতর আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আতরআলী নিরুপম চন্দকে মুসকান জুবেরী সম্পর্কে অদ্ভুত এবং চাঞ্চল্যকর তথ্য দেন। এর পর কি হয় তা জানার জন্য অবশ্যই আপনাকে এই ওয়েব সিরিজটি দেখতে হবে।
পরিচালক সৃজিত মুখার্জী যখন ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেননি’ উপন্যাস অবলম্বনে ওয়েব সিরিজ নির্মাণ করবেন ভেবেছিলেন এবং সবকিছু ঠিক করেন তখন তিনি বাংলাদেশে আরও বেশকিছু অভিনেতাদের নিয়ে এই ওয়েবসিরিজে কাজ করবেন বলে প্রস্তুত হন এবং তাদের সঙ্গে কথাবার্তাও ফাইনাল হয়ে যায় কিন্তু অতিমারির কারণে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বন্ধ থাকার দরুন এবং বাংলাদেশেও লকডাউন থাকার দরুন সেই পরিকল্পনা আর বাস্তবায়িত হতে পারেনি।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x