‘নেয়ি সুবহা’ গানটি যারা শোনেননি তাদের কাছে একটাই অনুরোধ গানটা একবার শুনুন। ইউটিউবে ‘রেভোলিউশন’ চ্যানেলে এই গানটি পেয়ে যাবেন। গানটা শুনে আপনি একটা কিছু অনুভব করতে পারবেন এইটুকু আমরা বলতে পারি।আমাদের শুনে যেটা মনে হলো সেইটুকু অভিজ্ঞতা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করছি। গানটি যারা গেয়েছেন সেটি একটি বাংলা রক ব্যান্ড। ব্যান্ডের নাম ‘রেভোলিউশন’।
এই রক ব্যান্ড ২০০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও বেশ কিছু কারণে ২০০৯ সাল নাগাদ এই ব্যান্ডটি ইনঅ্যাক্টিভ হয়ে যায়।
২০১৩ সালে পাঁচজন মিলে আবার রেভোলিউশন এর যাত্রাপথ নতুন করে শুরু হয়। এই ৫ জন সদস্য হলেন রাজশেখর দেবরায় যিনি বেস গিটার এবং ম্যানেজমেন্ট এর দায়িত্ব সামলাচ্ছেন, শুভঙ্কর পন্ডা যিনি লিড ভোকালিস্ট, সানি মজুমদার লিড গিটারিস্ট, রিশব মিত্র মুস্তাফি ড্রামার, রাজীব হালদার গীটার এবং এফেক্ট, এবং কুনাল দে কিবোর্ড।
রেভোলিউশন ব্যান্ড ‘ইন্ডিয়া বানেগা মঞ্চ’ প্রতিযোগিতায় ওয়াইল্ডকার্ড রাউন্ড পর্যন্ত পৌঁছেছিল এবং বহু ব্যান্ড কম্পিটিশন এ বিজয়ী হয়েছিল।
রেভোলিউশন ইতিমধ্যে নটা বাংলা এবং সাতটা হিন্দি গান বের করে ফেলেছে।
সারা ভারতবর্ষে জুড়ে প্রচুর শো করেছে তারা। রেবেলিউশন কলকাতার একটি রেজিস্টার্ড ব্যান্ড।
তাদের গানের বিষয়বস্তু হল মানুষের মানবিক ও সামাজিক অবক্ষয় হচ্ছে সেগুলো তুলে ধরা এবং মূল্যবোধ জাগ্রত করা। গান গাওয়ার মধ্যে দিয়ে এই ব্যান্ড মানুষের মধ্যে মানসিকতার পরিবর্তন করতে চায়।
ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য রাজশেখর দেবরায় জানান “এখন ফিল্ম মিউজিকে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয় সে পরিমাণ অর্থ ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্টিস্টদের পক্ষে ব্যয় করা সম্ভব নয়। তিনি এও জানান এখন প্রত্যেকটি গান, অ্যালবাম কে হিট হতে গেলে প্রচুর মার্কেটিং করতে হয় যেটা সব ইন্ডিপেন্ডেন্ট আর্টিস্টদের পক্ষে করা সম্ভব হয় না”।
তিনি বলেন” ডিজিটাল গ্লোবালাইজেশন এর কারণে মানুষ এখন সস্তা বিনোদন তুলতে শুরু করেছে যার ফলে মেধা জনিত শিল্প অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে।
তিনি আরো জানান সমাজটা খুব বেশি মানবিক নয় যান্ত্রিক, তাই কোনো মানবিক জিনিস খুব একটা বেশি গুরুত্ব পায় না। মানুষ গান শুনে তার অর্থ বোঝার চেয়ে গানটি শুনে কতটা এন্টারটেইন হচ্ছে এ ব্যাপারে বেশি আগ্রহী থাকে এর ফলে ভালো ভালো গান ভিউজ ও পায়না এবং বিপুল পরিমাণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে যায় না কারণ তারা প্রচারের আলোই পায়না”।
রাজশেখর জানান এ বছর আরও পাঁচটা গান তাদের রিলিজ হবে তাদের ইউটিউব চ্যানেল থেকে। এই গানগুলির সাউন্ড এবং লিরিকস নিয়ে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রত্যেকটি গানকে খুবই যত্নের সঙ্গে তৈরি করা হচ্ছে যে তাদের বিগত কাজগুলি শুনলেই বোঝা যায়।
রেভোলিউশন ব্যান্ডের ‘ম্যায় বাওরা’ গানের মিউজিক ভিডিওটি পশ্চিমবঙ্গের ইন্ডিপেন্ডেন্ট ব্যান্ড হিসেবে সবথেকে ব্যয় বহুল একটি মিউজিক ভিডিও প্রথমবার জি মিউজিক মুম্বাই থেকে রিলিজ হয়। তাছাড়া আরও অনেক ন্যাশনাল প্লাটফর্ম থেকে রেভোলিউশন এর গান মুক্তি পায়।
রেভোলিউশন ব্যান্ড এতটাই জনপ্রিয় যে তারা প্রত্যেক বছর ৪০ থেকে ৫০ টি শোতে পারফর্ম করে। জনপ্রিয়তার দিক থেকেও রেবেলিউশন খুবই এগিয়ে রয়েছে ভারতের ব্যান্ড সিনারিওতে।