আজ ২ শো রা নভেম্বর বর্তমানে ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় ছোটপর্দার ধারাবাহিক “রাধা-কৃষ্ণ” এর প্রধান চরিত্র “কৃষ্ণ” অর্থাৎ সুমেধ মুদগলকরের জন্মদিন । ভারতীয়দের হার্টথ্রব সুমেধ পা দিলেন ২৫ শে। তাঁকে চেনেনা বা ভালোবাসেন না সারা ভারতবর্ষ জুড়ে এমন মানুষ খুবই বিরল।একনামে যাঁকে চেনে সারা ভারতবর্ষের মানুষ তাঁর জন্মদিন তো বিশেষ ভাবে কাটবেই । আর তা দর্শকরা সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনিতেই দেখতে পাবেন । কিন্তু আজ জানাবো তাঁর জীবনের কিছু জানা-অজানা কথা।
ভারতীয়দের হার্টথ্রব সুমেধ মুদগলকরের জীবনের শুরুটা ছিল ডান্স রিয়্যালিটি শো এর মাধ্যমে। জানা যায় যে অসম্ভব প্রতিভার অধিকারী সুমেধ ছোটবেলায় প্রথাগত শিক্ষায় নয়, সম্পূর্ণ নিজের প্রচেষ্টায় নৃত্যকলাকে আয়ত্ত করেন এবং বিভিন্ন ডান্স রিয়্যালিটি শো তে অংশগ্রহণ করেন ও ফাইনালিস্টও হন। ২০১২ তে “ডান্স মহারাষ্ট্র ডান্স” এবং পরবর্তীকালে “ডান্স ইন্ডিয়া ডান্স”এর মত জনপ্রিয় ডান্স রিয়্যালিটি শো তে তাঁর প্রতিভায় মুগ্ধ হন বিচারক সহ একাধিক দর্শকরা । সেখান থেকেই তার জনপ্রিয়তার শুরু হয়। এভাবেই তিনি ধীরে ধীরে অভিনয় জগতে পা রাখেন। তাঁকে প্রথম ধারাবাহিক “দিল দোস্তি ডান্স” নামক একটি নৃত্য বিষয়ক ধারাবাহিকে রাঘবের চরিত্রে অভিনয়ে দেখা যায় প্রথম। তারপর “চক্রবর্তী অশোক সম্রাট” ধারাবাহিকে নেগেটিভ চরিত্র “যুবরাজ সুশিম ” এর চরিত্রে তিনি তাঁর অভিনয়ের অসামান্য দক্ষতার স্বাক্ষর রাখেন। এছাড়াও “মানঝা” নামের একটি মারাঠি ছবিতে প্রধান চরিত্রে একজন সাইকোপাথ এর ভূমিকায় তাঁর দুর্দান্ত অভিনয় দেখা যায়।
কিন্তু তাঁর কেরিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট ছিল “রাধা-কৃষ্ণ” ধারাবাহিকটি । “কৃষ্ণের” চরিত্রের মাধ্যমে তিনি দর্শকদের মন যেভাবে ছুঁয়েছেন তা কয়েকটি শব্দে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তাঁর অভিনয় অনেক মনকে কৃষ্ণপ্রেমেকে খুব কাছ থেকে বুঝতে সাহায্য করেছে।বহু দর্শকের জীবনে আদর্শ হয়েউঠেছেন তিনি। বহু মানুষের ভালোবাসায় তিনি ইনস্টাগ্রামে ২ মিলিয়ন অনুগামী অর্জন করেছেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময় নানা আওয়ার্ড ও অর্জন করে নিয়েছেন । তার মধ্যে অন্যতম ছিল ২০২১ এর “ইন্টারন্যাশনাল আইকনিক আওয়ার্ড” , যেখানে তিনি বেস্ট এক্টর এর আওয়ার্ড পান।
“কৃষ্ণ” হিসেবে তাঁর দীর্ঘ যাত্রা তাঁকে খ্যাতির শীর্ষে পৌঁছে দিয়েছে আজ ঠিকই। কিন্তু তাঁর এই যাত্রা কখনোই সহজ ছিলনা না।অভিনয় প্রথাগত ভাবে না শিখেও প্রতিটি চরিত্র এত নিখুঁত ভাবে অভিনয় করে গেছেন শুধুমাত্র তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম আর প্রতিভার মাধ্যমে। একধিক রিজেকশন , মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে হওয়ায় জীবনের বিভিন্ন সময়ে নানা মানুষের নানা কথা তাঁকে সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু সেসব কথায় আমল না দিয়ে শুধু মাত্র নিজের অসম্ভব প্রচেষ্টার মাধ্যমে তিনি আজ সফল হয়ে ওঠার দৃষ্টান্ত রেখেছেন ভারতবাসীর কাছে। কোভিড এর মত মহামারীর পরিস্থিতিও তিনি তাঁর সর্বস্ব দিয়ে কিভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন ,এটা কারোরই হয়তো অজানা নয়।এত অল্প বয়সে শুধু মাত্র “কৃষ্ণ” হিসেবে নয়,প্রকৃত জীবনে মানুষ হিসাবেও তিনি আমাদের আদর্শ ।
“রাধা-কৃষ্ণ” ধারাবাহিকটি বর্তমানে শেষ , তাই তো বহু দর্শক তাঁকে দারুন ভাবে মিস করছেন “কৃষ্ণ” হিসাবে পর্দায় । তাই আমরা সবাই আশা করব শীঘ্রই তাঁকে আমরা নতুন কোন চরিত্রে দেখতে পাবো। তাঁর জন্মদিনে রইল অসম্ভব ভালোবাসা। তাঁর আগামী জীবনের জন্য রইল একরাশ শুভেচ্ছা। অসংখ্য মানুষের ভালোবাসায় ভরে উঠুক তাঁর জীবন।