প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী অভিনীত ‘গুমনামী’ ছবিটির ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে

প্রসেনজিৎ চ্যাটার্জী অভিনীত ‘গুমনামী’ ছবিটির ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে। এই ছবিটি পরিচালনা করেছেন পরিচালক সৃজিত মুখার্জী। এই ছবিটির মাধ্যমে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি নেতাজির অন্তর্ধান রহস্য এবং তার মৃত্যু কিভাবে ঘটে তা দেখানোর চেষ্টা করেছেন।১৯৯৯ সালে নেতাজীর মৃত্যু অন্তর্ধান রহস্য নিয়ে গঠিত হয় বিচারপতি শ্যামল কুমার মুখার্জীর তত্ত্বাবধানে মুখার্জি কমিশন। এই কমিশন ২০০৫ সালে তার রিপোর্ট তদানীন্তন কংগ্রেস সরকারের কাছে জমা দেন। তদানীন্তন কংগ্রেস সরকারের রিপোর্টের বিভিন্ন তথ্য, বিবৃতি নস্যাৎ করে দেন। নেতাজির মৃত্যু নিয়ে মুখার্জি কমিশন সম্ভাব্য তিনটি তত্ত্ব জমা দেন। প্রথম তথ্যটি হলো তাইওয়ানের তাইহোকু বিমানবন্দরের বিমান দুর্ঘটনার তত্ত্ব। রিপোর্টে বলা হয় তাইওয়ানের বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু ঘটে তবে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের রিপোর্ট অনুযায়ী যেই বিমান দুর্ঘটনা এবং যেইদিন এই দুর্ঘটনা ঘটে সেই রকম কোন তথ্য বা নথি বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে ছিল না যার থেকে এটা প্রমাণিত হয় সেইদিন তাইওয়ানে তাইহোকু বিমান বন্দরে কোন বিমান দুর্ঘটনা ঘটেনি। নেতাজির ছায়াসঙ্গী তথা আজাদিন বাহিনীর ক্যাপ্টেন হাবিবুর রহমানের মতে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজি অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান। তার মুখ এবং বুক পর্যন্ত পুরো ঝলসে গিয়েছিল এবং নেতাজির মৃত্যুর সময় তার কফিনে সাদা কাপড় দিয়ে মাথা থেকে পা পর্যন্ত জড়ানো ছিল। ফটোগ্রাফার ছবি তুলতে গেলে হাবিবুর রহমান বলেন যেহেতু তার মুখ অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঝলসে গিয়েছিল এবং বিকৃত হয়ে গিয়েছিল তাই বুকের নিচ থেকে তার ছবি তুলতে। তিনি চাননা দেশবাসী নেতাজির এই নির্মম চেহারার স্মৃতি আঁকড়ে থাকুক। কিন্তু তার বক্তব্য পরে তিনি বদলান এবং বলেন তিনি ওই মৃত ব্যক্তি নেতাজি কিনা তার দৃঢ়ভাবে বলতে পারছেন এবং আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হলো সেইদিন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তরফ থেকে যাত্রীদের দৃষ্টি পাওয়া গেছে সেখানে নেতাজির নাম ছিল না। সে ক্ষেত্রে তাইওয়ান বিমানবন্দরে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যু মিথ্যা প্রমাণিত হয়। দ্বিতীয় তথ্যটি হলো রাশিয়া তত্ত্ব। অনেকের ধারণা নেতাজি আত্মগোপন করে রাশিয়ায় গিয়ে থাকার সময় রাশিয়ার গোয়েন্দাদের হাতে তিনি ধরা পড়েন এবং তাকে শারীরিকভাবে অত্যাচার করা হয় এবং শরীরে বিষক্রিয়া ঘটিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। তিনি কিভাবে রাশিয়ায় গেলেন এবং সেখানে আত্মগোপন করে কেন ছিলেন তা নিয়ে ধোঁয়াশার জট খুলতে পারেননি। তৃতীয় তত্ত্বটি হলো গুমনামী বাবার তত্ত্ব। এই তত্ত্বটি নিয়ে দেশের সবথেকে বেশি আলোড়ন, গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। উত্তরপ্রদেশের লখনৌ, বেনারস এর ফাজিলাবাদ, অযোধ্যা, লালকুঠি তে থাকতেন এই গুমনামি বাবা। গুঞ্জন শোনা যায় নেতাজি জাপান থেকে আত্মগোপন করে এবং ছদ্মবেশ ধারণ করে জাপান থেকে ভারতের বেনারস এবং লখনৌতে গুমনামী নাম ধারণ করে সন্ন্যাসীর জীবন যাপন করেন। ডিএনএ টেস্ট করে দেখা যায় নেতাজির সঙ্গে গুমনামী বাবার কোনো সাদৃশ্য নেই। এই তিনটি তত্ত্ব এবং তথ্যের সত্যতা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায় তার এই ছবিটির মধ্যে দিয়ে। এই ছবিটি এই দুর্গাপুজোয় মুক্তি পাবে। এই ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন সুপারস্টার প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়। অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনির্বাণ ভট্টাচার্য্য, তনুশ্রী চক্রবর্তী, বিপ্লব দাসগুপ্ত, শ্যামল চক্রবর্তী, সুরেন্দ্র রঞ্জন, সঞ্জয় গুরবক্সানী, অক্ষয় কুমার, সত্যম ভট্টাচার্য্য, শুভাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রান্তিক ব্যানার্জি। এই ছবিটির সংগীত পরিচালনা করেছেন এবং আবহসঙ্গীত পরিচালনা করেছেন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। এই ছবিটি প্রযোজনা করছেন শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস এবং দাগ ক্রিয়েটিভ প্রোডাকশন এর পরিচালক অভিষেক দাগা।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x