“রোটারাক্ট ডিস্ট্রিক্ট অর্গানাইজেশন ৩২৯১”পক্ষ থেকে অন্ধ ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য এক অভিনব উদ্যোগ “রোটা হ্যাপি হাউস” গত ২৪ শে জুলাই সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়।

ডি এস ব্লাইন্ড স্কুল এ ১২০ জন মত দৃষ্টিশক্তিহীন বাচ্চা রা থাকে।তাদের পড়াশোনা করার জন্য ব্রেইল শিক্ষা পদ্ধতি যেমন সাহায্য করে ঠিক তেমনই আর একটি শিক্ষা পদ্ধতি হলো শুনে শুনে পড়ে মুখস্ত করা। এই শুনে শুনে পড়ে মুখস্ত করার জন্য তাদের শিক্ষক- শিক্ষিকারা স্পিকারে তাদের ভয়েস রেকর্ড করে বাচ্চাদের কে সেটা দেন। একটি করে স্পিকার ২-৩ জন বাচ্চা কে দেওয়া হয়।

ডি.এস. ব্লাইন্ড স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা।

সেজন্যই গত ২৪ তারিখ ডি.এস. ব্লাইন্ড স্কুল এ “রোটারাক্ট ডিস্ট্রিক্ট অরগানাইজেশন ৩২৯১” ২০ টা মাইক্রো এস.ডি.কার্ড সহ ২০ টা জেব্রনিক্স ব্লু টুথ স্পিকার দেন ৪০-৬০ জন বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্য। সেদিন বাচ্চাদের দুপুরের খাবারের ও ব্যাবস্থা করা হয় তাদের পক্ষ থেকে।
“রোটারাক্ট ডিস্ট্রিক্ট অর্গানাইজেশন ৩২৯১” কিন্ত এর আগেও ‘আমফান’ এবং ‘ইয়াশ’ ঘূর্ণিঝড়ে বিধ্বস্ত সুন্দরবন এলাকায় প্রায় ৪০০ মানুষের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিয়েছিলেন।এই সংস্থা প্রথম থেকেই বিভিন্ন অনাথ আশ্রম, অন্ধদের বিদ্যালয় , বৃদ্ধাশ্রম এ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ করে থাকেন।
“রোটা হ্যাপি হাউস” উদ্যোগের প্রথম কাজ শুরু হয় গত ২৪ শে জুলাই ‘ডি.এস. ব্লাইন্ড স্কুল’ এ ‘ব্লুটুথ স্পিকার’ এবং ‘মাইক্রো এস.ডি.কার্ড’ বিতরণের মধ্য দিয়ে। ‘রোটা হ্যাপি হাউজের’ এই প্রথম উদ্যোগটি খুবই সফল ভাবে উদযাপিত হয় এবং এই সংস্থার ৪ জন প্রতিনিধি এই উদ্যোগে থাকতে পেরে খুবই খুশি এবং আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন।

ডিএস ব্লাইন্ড স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে ব্লুটুথ স্পিকার তুলে দিচ্ছেন ‘রোটারাক্ট ডিস্ট্রিক্ট অর্গানাইজেশন ৩২৯১’ এর সভাপতি অর্ক কুমার নাগ।


এই সংস্থার এটি পঞ্চাশতম কনফারেন্স বছর তাই এই বছরটি তাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
এই সংস্থার সদস্য সদস্যাদের বলা হয় ‘রোটারেক্টর’। এই সংস্থায় প্রায় ৩৫০০রোটারেক্টর রয়েছেন যাদের মধ্যে প্রায় ১৮০০ রোটারেক্টর একেবারে তৃণমূল স্তরে থেকে মানুষের সাহায্য করেন। যখন কোভিড পরিস্থিতি তুঙ্গে ছিল তখনও কিন্তু তাঁরা রাস্তায় নেমে ত্রাণ সামগ্রী, প্রয়োজনীয় ওষুধ, অ্যাম্বুলেন্স, অক্সিজেন সিলিন্ডার থেকে শুরু করে রক্তদান শিবির, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের জন্য কাজ সমস্তটাই করে গেছেন , কখনোই পিছুপা হননি।আগামী দিনে পরিস্থিতি ঠিক হলে ভ্যাকসিন নিয়েও কাজ করার ইচ্ছা তাঁরা প্রকাশ করেছেন।

ডিএস ব্লাইন্ড স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আনা ব্লুটুথ স্পিকার এবং মাইক্রো এস.ডি. কার্ড।


“রোটারাক্ট ডিস্ট্রিক্ট অর্গানাইজেশন ৩২৯১” এর সভাপতি অর্ক কুমার নাগ আমাদের জানান
“বর্তমানে প্যানডেমিকের সময় বিভিন্ন প্রতিকূলতা অবশ্যই ছিল কিন্তু তা সত্ত্বেও ১২০ টি দৃষ্টিশক্তিহীন বাচ্চাকে নিয়ে একটা দুপুর কাটানো অনেক আনন্দের। আমরা গত ২৪ তারিখ সরাসরি পোঁছে যাই এই ডি.এস.ব্লাইন্ড স্কুল এ।পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে হয়তো আরো অনেক জন মিলে কাজ টা করা যেত ।কিন্তু এই মহামারীর পরিস্থিতিতে ৪ থেকে ৫ জন মিলে কোভিড বিধিনিষেধ মেনেই কাজ টা করতে হয়েছে, যদিও তাতে কাজের কোনোরকম সমস্যা হয় নি”।তিনি জানান এই ‘রোটা হ্যাপি হাউস’ উদ্যোগ পরিচালনা এবং তদারকির দায়িত্বে ছিলেন শ্রেয়া সাহা। সেদিন এই মহান উদ্যোগে সম্পাদক মন্ডলীর অন্যতম সদস্য নীলরতন বাগচী ও উপস্থিত ছিলেন তাদের সঙ্গে।

ডি.এস. ব্লাইন্ড স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা।


তারা খুব শীঘ্রই এই ধরনের অনেক ‘সামাজিক উদ্যোগ’ নিয়ে আসতে চলেছেন।

0 0 votes
Article Rating
Subscribe
Notify of
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments
0
Would love your thoughts, please comment.x
()
x