বায়োস্কোপ কথাটি শুনলেই আমরা প্রথমে চলে যাই এক স্বপ্নের দুনিয়াতে, যেখানে কেবল ছবির মেলা। সম্প্রতি হইচই প্ল্যার্টফর্মে মুক্তি পেয়েছে ঐতিহাসিক চরিত্র ‘হীরালাল’। ছবির পরিচালক অরুণ রায়। এই গল্পের শুরু ১৯৮৩ সাল থেকে, সেখান দিকেই হীরালালের পরিচিতি শুরু একজন ফটোগ্রাফার হিসাবে। তিনিই ভারতের সর্ব প্রথম অ্যাড ফিল্ম বানিয়েছিলেন, এবং ভারতের প্রথম রাজনৈতিক তথ্যচিত্র বানিয়ে ছিলেন। এই কাহিনী তাকে ঘিরেই। ভারতে বায়োস্কোপের আগমন, সেই সময়কার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সমাজের সেই পুরানো বাল্য-বিবাহের মতো প্রথা এখানে তুলে ধরা হয়েছে।
চলচ্চিত্রে কিছু মুখ্য চরিত্রে রয়েছেন, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, খরাজ মুখোপাধ্যায় এবং শংকর চক্রবর্তী। সম্পূর্ণ সিনেমাতে সবার স্ক্রিন টাইম খুব বেশি না হলেও তারা তাদের অভিনয় দিয়ে সেই চরিত্র গুলিকে যথার্থ করে তুলেছেন। চলচ্চিত্রের বেশ কিছু প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনেক নবাগত। হীরালাল সেন এর চরিত্রে অভিনয় করেছেন কিঞ্জল নন্দা, হেমাঙ্গিনী দেবীর চরিত্রে আছেন, অনুষ্কা চক্রবর্তী, কুসুমকুমারী এর ভূমিকাতে তন্নিষ্ঠা বিশ্বাস, এবং মতিলাল সেন এর চরিত্রে পার্থ সিনহা।
যেহেতু এটি একটি বায়োগ্রাফ চলচ্চিত্র, এবং ঘটনাটি স্বাধীনতারও পূর্বে তাই সেই পরিবেশটাকেও এখনো সেভাবেই তুলে ধরা ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর সে ক্ষেত্রে বলা যেতেই পারে তা তুলে ধরতে সার্থক হয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা। সেই সময়ের বর্তমান সমাজের পরিস্থিতি, মানুষের চিন্তাধারা, সম্পর্কের টানাপোড়ন সবটাই দর্শকের কাছে তুলে ধরতে চেয়েছেন নির্মাতা।
ক্যামেরার প্রতি হীরালালের ছোট থেকে ভালোবাসা ও খানিক পাগলামি বা জেদ তাঁর জীবনটাকে মুড়ে রেখেছিল। বায়োস্কোপ এর জন্যে তাঁর গাঢ় ভালোবাসা, কিছু করে দেখানোর জেদ, পরিবারের প্রতি দায়িত্ববান, শিল্পকে মর্যাদা দেওয়া, মানুষের প্রতি বিশ্বাস সেই সব কিছুই যেন হীরালালের চরিত্রকে আরও নিপুন করে তুলেছে। কিন্তু সময়ের সাথে সেই সবকিছু তাঁর থেকে হারিয়েছে। এখন প্রশ্ন কেন আর কিভাবে হারিয়েছে। চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্র হীরালাল ছাড়াও বাকি সকল চরিত্রকেও নির্মাতা গুরুত্ব দিয়েছেন এবং তাঁদের ও ভাবমূর্তির বিশ্লেষণ করে গেছেন। যে মানুষটি বায়োস্কোপের জন্যে এতো কিছু করলেন শেষ জীবনে গিয়ে তার পরিণতি কী হলো এবং ভারতীয় সিনেমার জগতে তিনি কিভাবে নিজের নাম চিরতরে রেখে গেলেন তা জানতে গেলে অবশ্যই দেখতে হবে অরুন সেন পরিচালিত “হীরালাল সেন”।